January 5, 2025, 7:56 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
যশোরের একটি মাদ্রাসার আরবি ভাষায় ভাষণ দেয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বির্তকের বিষয়ে জানা গেছে ঘটনাটি ঐ মাদ্্রসায় আয়োজিত বাষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’র একটি অংশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
তবে এই ধরনের আয়োজনের বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল।
যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার ঐ ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায় মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। ঠিক তার পাশেই দুই জন কালো কাপড় মুখ ঢেকে অস্ত্র হাতে গার্ডের মতো দাঁড়িয়ে আছেন। মঞ্চের আশপাশে বেশ কয়েকজনকে শ্রোতা হিসেবে দেখা যায়।
‘ডা. ইলিশ নজরুল’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ছড়িয়ে পড়া ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। পোস্ট করা ওই ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘দেশে জঙ্গির অবাধে চাষবাস’।
ভিডিওটি নিয়ে রীতিমতো নেটিজেনরা সমালোচনা করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবছর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্ররা ফিলিস্তিনের মানুষের লড়াই সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করে দেখিয়েছে। এটি অভিনয় ছাড়াই কিছুই নয়।
তিনি জানান, কিতাব বিভাগের তিন শিক্ষার্থী নাটকটি মঞ্চায়ন করে। ওদের মধ্যে একজন ফিলিস্তিন নেতা সেজে আরবিতে বক্তব্য দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর রাজারহাট বিহারি কলোনি এলাকায় ২০১২ সালে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কওমি ধারার এই মাদ্রাসায় প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখান থেকে মূলত হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি দেওয়া হয়।
লুৎফর আরও দাবি করেন, ‘বিষয়টি কোনো খারাপ উদ্দেশে নিয়ে করা হয়নি।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভিডিও তিনি দেখেছেন। এটি মাদ্রাসার ছাত্রদের প্রতিযোগিতার একটি অংশ। তারা অভিনয়ের অংশ হিসেবে ডামি অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা কাঠ, শোলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি।’
এ বিষয়ে কথা হয় কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের আল কোরআন বিভাগের প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকীর সাথে। তিনি জানান, ভিডিওতে কোরআনের দুটি আয়াত বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কতল আরেকটি জিহাদ সংক্রান্ত। তবে সশস্ত্র গার্ডের মতো দাঁড়িয়ে এভাবে মাদ্রাসার অনুষ্ঠান করা ঠিক হয়নি। কারন এভাবে মাদ্রাসা এবং আলেমদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।
তিনি জানান, বিষয়টি অভিনয়ের জন্য হলেও এভাবে করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।’
এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী জানান, ভিডিওটি মাদ্রাসাটির বার্ষিক যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে ককসিট দিয়ে তারা নকল অস্ত্র বানিয়ে উপস্থাপন করে। তারপরও ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা সেটা তদন্ত করা হবে।
Leave a Reply